প্রায় ৯ বছর আগের কথা। ঈদ উদযাপনের শেষ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত মানুষ। ঠিক তখন ফিল্মি স্টাইলে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয় যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক মিল্কীকে। দেশবাসীকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল নির্মম হত্যাকাণ্ডের সেই দৃশ্য।
রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের একটি শপিংমলের সামনে অস্ত্রধারী ঘাতক খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করেছিল। হত্যাকাণ্ডের সেই দৃশ্য গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় ঘটনাটি মানুষ ভুলেনি। কিন্তু প্রকাশ্যে ঘটে যাওয়া আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষ হয়নি এখনো।
উলটো তদন্ত নিয়ে নানা নাটকীয়তার ফাঁকে আসামিদের কেউ দেশ ছেড়েছে। কেউ কেউ জামিনে বেরিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরছেন বীরদর্পে। আবার মামলার এজাহারভুক্ত আসামির কেউ কেউ অভিযোগপত্রের মাধ্যমে পার পেয়েছেন।
শুধু মিল্কী হত্যাকাণ্ড নয়, বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর প্রায় শতাধিক খুনের মামলার বিচারের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যেন বছরের পর বছর ধরে বিচারের বাণী কাঁদছে নীরবে-নিভৃতে। এর নেপথ্যে রাজনৈতিক ও আর্থিক প্রভাব কাজ করেছে।
নানামুখী প্রভাবে বিলম্বিত হচ্ছে এসব মামলার তদন্ত ও বিচার কাজ। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এতে আস্থাহীনতা ঘনীভূত হলে হয়তো রাজধানীতে গুলিতে নিহত কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতির বাবার মতো বিচার না চাওয়ার দিকে ঝুঁকবে মানুষ।
২৪ মার্চ মেয়ে হারানোর পর তার (প্রীতি) বাবা আক্ষেপের সুরে বলেছিলেন, ‘বিচার চাই না, আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রাখলাম। কার শাস্তি চাইব। বিচার নাই, বিচার কার কাছে চাইব।’
পুলিশ, র্যাব, সিআইডি, ডিবি ও থানা পুলিশ আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এসব হত্যা মামলার তদন্ত করেছে বা করছে। এরমধ্যে অনেক মামলার তদন্ত ও বিচার কার্যক্রমের গতি ফেরাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠন করা হয়েছে মনিটরিং সেল।
তারপরও এসব মামলার তদন্ত ও বিচার কার্যক্রমে গতি ফিরছে না। পুলিশ সদর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আদালত সূত্রে উল্লিখিত সব তথ্য জানা গেছে।
আইনবিদ শাহদীন মালিক যুগান্তরকে বলেন, খুনের মামলার তদন্ত ও বিচারের অবস্থা খুবই নাজুক। দুর্বল তদন্ত অনেক সময় আদালতের বিচারে টেকে না। ফলে আসামিরা সেই সুবিধায় রক্ষা পেয়ে যায়। এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১০ সালে দেশে সাড়ে তিন হাজার খুনের মামলার মধ্যে মাত্র ৫০০ মামলা ট্রায়ালে যায়।
এসব মামলায় শতকরা ১০ ভাগ আসামিরও শাস্তি হয়নি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আইনে অনেক কিছু আছে। কিন্তু আইন মানার প্রবণতা কমে গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগও এ প্রবণতার বাইরে নয়।
অপরাধ বিশ্লেষকরা বলেছেন, পৈশাচিক! নৃশংস, নির্মম। এই শব্দগুলো কানে এলেই মানুষের বিবেককে মারাত্মকভাবে আঘাত করে। যেসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা মানুষের বিবেককে আলোড়িত করে সেগুলোই আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর মামলা হিসাবে বিবেচিত হয়।
এ ধরনের মামলার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে গঠন করা হয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে নির্দিষ্ট কিছু মামলা অনধিক ১২০ দিনের মধ্যে বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানেও নির্ধারিত সময়ে বিচার কাজ শেষ হচ্ছে না।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালেও কেন দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা যাচ্ছে না? এমন প্রশ্নের উত্তর খুজতে গিয়ে বিচারক, আইনজীবী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন এ প্রতিবেদক। অনেকেরই অভিযোগ, সব সরকারের আমলেই ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক বিবেচনায় আলোচিত মামলাগুলোর তদন্ত বিচারে প্রভাব বিস্তার করে।
এক সময় ফৌজদারি মামলার প্রসিকিউশন হিসাবে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত। কিন্তু এক দশকের বেশি সময়ের ব্যবধানে এটা রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ পাওয়া পিপি ও এপিপিদের হাতে চলে গেছে। এরপর ফৌজদারি মামলার বিচারে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তনের কোনো খবর মিলেনি।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লহা আবু যুগান্তরকে বলেন, মামলা নিষ্পতির দীর্ঘসূত্রতার অন্যতম কারণ হচ্ছে সাক্ষী না পাওয়া। মামলার অভিযোগপত্রে সাক্ষীদের যে ঠিকানা থাকে বাস্তবে সেখানে তাদের পাওয়া যায় না।
পুরোনো মামলাগুলোতে এই সমস্যা প্রকট। তারপরও দ্রুত বিচার নিষ্পত্তিতে প্রসিকিউটর হিসাবে আমরা সহায়তা করি। আর তদন্তাধীন অনেক মামলা ক্লুলেস অর্থাৎ সূত্র পাওয়া যায় না। বছরের পর বছর তদন্তকারী সংস্থা যেসব মামলাগুলোর রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারছে না সেইগুলো ফেলে রাখা উচিত নয়।
হয়তো মামলাগুলো ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া উচিত। নয়তো, রহস্য উদ্ঘাটন করে অভিযোগপত্র দেওয়া উচিত। মামলা ফেলে রাখা ঠিক নয়। এটা রাষ্ট্রের জন্য মঙ্গলজনক নয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর যেসব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত বছরের পর বছর ধরে ঝুলে আছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী, নারায়ণগঞ্জের কিশোর তানভীর মুহম্মদ ত্বকী, কুমিল্লার সোহাগী জাহান তনু, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ড।
সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডের পর আদালতের নির্দেশে বহুল আলোচিত এই মামলার তদন্ত ডিবি থেকে সরিয়ে এলিট ফোর্স হিসাবে খ্যাত র্যাবকে দেওয়া হয়। সাংবাদিক সমাজের বহু আন্দোলন সংগ্রামের পরও তদন্তের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি জানতে পারেনি দেশবাসী।
তদন্ত কর্মকর্তারাও নিয়মিত বিরতিতে আদালতে হাজির হয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময় প্রার্থনা করছেন। আদালতও তাদের সময় দিচ্ছেন। এ পর্যন্ত ৮৭ বার সময় বাড়িয়েছে আদালত। এ সময়ে তদন্ত সংস্থার ব্যর্থতার দায় নিরূপণে কোনো নির্দেশ দেননি আদালত।
আবার তদন্তে ব্যর্থতার জন্য তদন্তভার অন্য কোনো সংস্থার কাছে স্থানান্তর করাও হয়নি। এ মামলাসংক্রান্ত তদন্ত সংস্থা ও আদালতের কার্যক্রম এখন সাধারণ মানুষের কাছেও প্রশ্নবিদ্ধ। আর সাগর-রুনীর পরিবারের অভিযোগ, নানামুখী প্রভাব বলয়ের কারণেই মামলাটির তদন্ত এভাবে ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জে মেধাবী ছাত্র তানভীর আহমেদ ত্বকী হত্যার বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছিল পুরো নারায়ণগঞ্জ। এক সময় আন্দোলন থেমে গেছে। ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সড়ক থেকে অপহৃত হয় মেধাবী ছাত্র তানভীর আহমেদ ত্বকী।
৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নয় বছর পার হলেও হত্যা রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি। একই সঙ্গে ফাইল বন্দি হয়ে গেছে তদন্তও। ত্বকী হত্যার নেপথ্যে স্থানীয় প্রভাবশালীদের হাত থাকায় তদন্ত সংস্থা রহস্য উদ্ঘাটন হচ্ছে না-এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
কুমিল্লার সোহাগী জাহান তনু হত্যার পেছনেও রাঘববোয়ালরা জড়িত থাকার অভিযোগ শুরু থেকেই। এ জন্য দেশজুড়ে তনু হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন দানা বাঁধলেও তদন্ত পর্যায়েই আটকে আছে সব।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আরও যেসব চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-রাজধানীর টিকাটুলির সিক্স মার্ডার, পরিবাগের তুর্কি অ্যাসোসিয়েটস অফিসে রমজান আলী খুন, অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম বাচ্চু হত্যাকাণ্ড, মালিবাগে সানরাইজ হোটেলের ভেতর ডিবি ইন্সপেক্টর নুরুল আলম শিকদার ও এসআই আলমগীর হোসেন তালুকদার হত্যা, পুরান ঢাকার ওয়ার্ড কমিশনার আহম্মদ হোসেন হত্যা, মিরপুরে ব্যবসায়ী আফতাব, প্রিন্স গ্রুপের মালিক কাজী শহিদুল হক, গুলশানে গৃহবধূ তাসমির হোসেন মুন্নী, পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী আজগর, খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী ইসলাম শিকদার, বিজয়নগরে ব্যবসায়ী নজরুল, সবুজবাগে আজিজুল, মিরপুরে আওয়ামী লীগ নেতা সামাদ খান, মিরপুরে মিসুক সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী সান্টু, মডেল তিন্নি হত্যা, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনু ও ফকিরাপুলে ব্যবসায়ী সোহেল হোসেন টিটু হত্যা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আলোচিত যেসব হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটিত করে আদালতে আসামিদের নামে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে সেসব মামলার বিচার কাজও বছরের পর বছর ঝুলে আছে। সময়মতো সাক্ষীপ্রমাণ হাজির না করাসহ নানা কারণে বিচার বিলম্বিত হয়।
আবার অনেক মামলার তদন্ত করে প্রভাবশালী আসামিদের বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় তদন্ত সংস্থা। এতে মামলার বাদী নারাজি আবেদন করলে আদালত মামলার পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন। এতে তদন্ত পর্যায়েই দীর্ঘসূত্রতার ফাঁকে আসামিরা জামিনে বেরিয়ে প্রভাব বিস্তার করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর খুন হন তখনকার আলোচিত মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি। এ মামলার একমাত্র আসামি সাবেক ছাত্রনেতা ও সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভি। বিদেশে পলাতক তিনি।
এরপরও মামলার বিচার কাজ ঝুলে আছে ২০ বছর ধরে। সবশেষ গত বছরের ১৫ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ থাকলেও তা হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ফের শুনানির দিন ঠিক করা হয়েছে।
এই মামলার রায় না হওয়ার পেছনে রাজনৈতিক ও আর্থিক প্রভাবের অভিযোগ আছে। ২০০৩ সালে দেশজুড়ে আলোচিত হয় মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে গুলি করে দুই পুলিশ সদস্য হত্যার ঘটনা।
ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করা এই হত্যাকাণ্ডের পর বিদেশে পালিয়ে যায় শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ মন্টি। প্রায় ২০ বছর চলে গেলেও হত্যা মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। আরও জানা গেছে, যুবলীগ নেতা মিল্কী হত্যাকাণ্ডের ৮ মাসের মাথায় ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় নয়জনকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। তার মধ্যে অন্যতম হলেন অতি সম্প্রতি গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু।
এছাড়াও অব্যাহতির তালিকায় ছিলেন ঢাকা মহানগর যুবলীগের (দক্ষিণ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল আলম আরিফ, ডা. দেওয়ান মো. ফরিদ উল্লাহ এবং মাহবুবুল হক হীরক।
এরা সবাই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় একটি বিশেষ মহলের তদবিরে তাদের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়-এমন ধারণা থেকে বাদী আদালতে নারাজি দেন।
এরপর সিআইডি পুনঃতদন্ত শেষে অভিযোগপত্র জমা দিলে ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর ১৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। আসামিদের মধ্যে বর্তমানে চঞ্চল, রফিক ও ইব্রাহিম পলাতক। চঞ্চল যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
তিনি মহানগর উত্তর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নেন। বাংলাদেশ থেকে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা. মন্ত্রীরা আমেরিকায় গেলে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে চলাফেরা করেন চঞ্চল।
রফিকুল ইসলামও প্রভাবশালী এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় গ্রেফতার এড়িয়ে চলছেন। আলোচিত এই মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়-আর্থিক, রাজনৈতিক, জমিজমা, দরপত্র, চাঁদাবাজি, ভর্তি বাণিজ্য ও দলে পদ পাওয়াসহ নানা বিরোধের জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে মিল্কীকে হত্যা করা হয়েছে।
এছাড়া ২০১৬ সালে মতিঝিলের যুবলীগকর্মী রিজভী হাসান বাবু হত্যা মামলার বিচার চলছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। এই মামলার আসামিরাই টিপু হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন। যথাসময়ে বাবু হত্যার বিচার নিশ্চিত করা গেলে টিপু হত্যাকাণ্ড এড়ানো যেত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিলম্বিত বিচার অনেক সময় নতুন অপরাধের জন্ম দেয় বলেও মনে করেন তারা। জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান যুগান্তরকে বলেন, মামলার আসামিরা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হলে খুব সহজেই তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রভাবিত করেন।
এক্ষেত্রে অনেক সময় তারা প্রভাব খাটিয়ে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করান। তাদের চাপে প্রত্যক্ষদশীরাও সবকিছু চেপে যায়। এতে প্রাথমিক স্তরেই মামলাটির মৃত্যু হয়। এক্ষেত্রে পুলিশকে এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আরও কঠোর ভূমিকা নিতে হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল যদিও দ্রুত বিচারের জন্য করা হয়েছে, কিন্তু নানা জটিলতায় সেটা কার্যকর হচ্ছে না। বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত সময়ে সেখানে বিচার কমই হচ্ছে। তবে অন্য আদালতের চেয়ে ট্রাইব্যুনালে বিচার নিষ্পত্তি হতে সময় অনেকটা কম লাগে।