নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্পের তোপের মুখে ইলন মাস্ক

0
21

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন মোড় নিয়েছে ইলন মাস্ক ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক। বিশ্বের শীর্ষ ধনী এবং টেসলা সিইও ইলন মাস্ক ঘোষণা দিয়েছেন ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের। এই ঘোষণা প্রকাশ্যে আসতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও প্রাক্তন মিত্র ডোনাল্ড ট্রাম্প মাস্কের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনায় মুখর হয়েছেন।

গতকাল রবিবার, এয়ার ফোর্স ওয়ানে ওঠার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি তৃতীয় পক্ষ শুরু করা হাস্যকর। এটা সবসময়ই একটি দ্বি-দলীয় ব্যবস্থা ছিল এবং তৃতীয় পক্ষ কেবল বিভ্রান্তি তৈরি করে।” এ বক্তব্যে স্পষ্ট যে, ট্রাম্প মাস্কের এই উদ্যোগকে রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক এবং অযৌক্তিক বলেই মনে করছেন।

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মেও মাস্ককে নিশানা করেন। তিনি লেখেন, “গত পাঁচ সপ্তাহে ইলন মাস্ককে পুরোপুরি দিশাহীন হয়ে পড়তে দেখেছি। তিনি এখন মূলত একটি ট্রেনের ধ্বংসস্তূপ।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন মাস্কের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও নীতিগত অবস্থানের প্রতি, বিশেষ করে তার বৈদ্যুতিক যানবাহন (ইভি) নীতির ওপর।

মাস্ক দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে ইভি গ্রহণকে বাধ্যতামূলক করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ট্রাম্প এই প্রস্তাবের শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছেন। তিনি দাবি করেন, তার নতুন কর ও ব্যয় পরিকল্পনা—যা তিনি ৪ জুলাই আইনে স্বাক্ষর করেছেন—এই বাধ্যতামূলক ইভি নীতির অবসান ঘটিয়েছে। এই আইনে সীমান্ত নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি উৎপাদনে বরাদ্দ বাড়ানো হলেও স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য সহায়তা খাতে বিতর্কিত কাটছাঁট আনা হয়েছে।

অন্যদিকে, মাস্কের দাবি, ট্রাম্পের এই ব্যয় পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক দেউলিয়ার দিকে ঠেলে দেবে। এই উদ্বেগ থেকেই তিনি ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠনের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান। মাস্ক বলেন, এই দল রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয়ের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে, এবং জনগণের প্রকৃত সমস্যাগুলোর সমাধানে কাজ করবে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ট্রাম্পের ২০২৪ সালের পুনঃনির্বাচন প্রচারে মাস্ক লক্ষ লক্ষ ডলার ব্যয় করেছিলেন। তারা একসাথে ওভাল অফিসসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেন। কিন্তু সাম্প্রতিক নীতিগত মতপার্থক্য তাদের সম্পর্কে চিড় ধরিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল রিপাবলিকানদের ভোটব্যাংকে প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষত তরুণ ও প্রযুক্তিবান্ধব ভোটারদের মধ্যে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তৃতীয় রাজনৈতিক দল গড়ে ওঠা সবসময়ই কঠিন ছিল, তবে মাস্কের মতো প্রভাবশালী একজন উদ্যোক্তার এই পদক্ষেপ কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।