চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫: পাকিস্তানে ভারতের না যাওয়া ও পতাকা বিতর্ক

0
30
অংশগ্রহণকারী অন্য সব দলের পতাকা থাকলেও ভারতের পতাকা নেই
অংশগ্রহণকারী অন্য সব দলের পতাকা থাকলেও ভারতের পতাকা নেই

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫ ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। এবারের আসরের আয়োজক পাকিস্তান হলেও ভারত তাদের ম্যাচ খেলবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে। পাকিস্তানে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের পাশাপাশি আরও একটি বিষয় আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে—গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অংশগ্রহণকারী ৮ দলের মধ্যে ভারতের পতাকা নেই। ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে।

ভারতের পাকিস্তানে না যাওয়ার কারণ

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) শুরু থেকেই জানিয়ে এসেছে, সরকার অনুমতি না দিলে তারা পাকিস্তানে দল পাঠাবে না। রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বিসিসিআই পাকিস্তানে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। শেষ পর্যন্ত সমঝোতার মাধ্যমে আইসিসি ‘হাইব্রিড মডেলে’ টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে ভারতের সব ম্যাচ হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে।

গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ভারতের পতাকা না থাকা নিয়ে বিতর্ক

সাম্প্রতিক কিছু ভিডিও ও ছবি থেকে জানা গেছে, লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ৮টি অংশগ্রহণকারী দলের মধ্যে ৭ দলের পতাকা টানানো হয়েছে। কিন্তু ভারতের পতাকা সেখানে দেখা যায়নি। এতে অনেকে মনে করছেন, ভারত পাকিস্তানে খেলতে না যাওয়ায় পিসিবি (পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড) তাদের পতাকা রাখেনি। যদিও এ নিয়ে পিসিবির আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

হিন্দুস্থান টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত দল পাকিস্তানে না আসার সিদ্ধান্তের জবাব হিসেবে পিসিবি তাদের পতাকা রাখেনি। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, নিরাপত্তাজনিত শঙ্কার কারণে এটি করা হতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

ভারতের না খেলার প্রভাব ও টুর্নামেন্ট কাঠামো

ভারতের পাকিস্তানে না যাওয়ার কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচি চূড়ান্ত করতেও বেশ দেরি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত হয় যে, ভারত তাদের ম্যাচগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে খেলবে। এমনকি টুর্নামেন্টের একটি সেমিফাইনাল ও ফাইনাল কোথায় হবে, সেটাও এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি।

ভারত এবার খেলছে ‘গ্রুপ-বি’তে, যেখানে তাদের প্রথম ম্যাচ ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের বিপক্ষে। একই গ্রুপে রয়েছে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি, যেখানে করাচিতে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড।

ক্রিকেট নাকি রাজনীতি?

ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের প্রভাব যে ক্রিকেটেও পড়ছে, তা নতুন কিছু নয়। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বন্ধ রয়েছে প্রায় এক দশক ধরে। কেবলমাত্র আইসিসি ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের টুর্নামেন্টেই তারা মুখোমুখি হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজনের এই বিতর্ক ক্রিকেটীয় কূটনীতির নতুন উদাহরণ। ভারত সরকারের অনুমতি না থাকায় বিসিসিআই পাকিস্তানে দল পাঠাচ্ছে না, যা পাকিস্তানের ক্রিকেট মহলে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে, ভারতের পতাকা না টানানোও কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ভবিষ্যৎ ও সম্ভাব্য সমাধান

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ভবিষ্যৎ আয়োজন কেমন হবে, তা নির্ভর করবে এই টুর্নামেন্টের সফলতার ওপর। আইসিসি চাইছে, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বাইরে রেখে ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে। তবে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কারণে ভবিষ্যতে এমন আরও বিতর্ক দেখা যেতে পারে। বিকল্প সমাধান হিসেবে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে এসব টুর্নামেন্ট আয়োজনের সম্ভাবনা বাড়ছে।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫ শুধুমাত্র ক্রিকেটীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, বরং ক্রিকেট-রাজনীতিরও এক বড় উদাহরণ হয়ে থাকল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here