লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়নের কালুপুর গ্রামে ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। মঙ্গলবার (গতকাল) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে ৬৫ বছর বয়সী তাজিয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যা করে। তার গলা ও নাকে থাকা স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয় খুনিরা। পরে রাত ১১টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত তাজিয়া বেগম স্থানীয় ক্বারী সাহেবের বাড়ির আব্দুল মান্নানের স্ত্রী। ঘটনার সময় আব্দুল মান্নান এশার নামাজ আদায় করতে স্থানীয় মসজিদে যান। তাজিয়া তখন ঘরে একা ছিলেন। এই সুযোগে কে বা কারা ঘরে প্রবেশ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, মান্নান নামাজ শেষে বাড়ি ফিরে রান্নাঘরে স্ত্রীর নিথর দেহ দেখতে পান। তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ঘটনাস্থলে জড়ো হন। তাজিয়ার দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় রান্নাঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল। পরবর্তীতে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং তদন্ত শুরু করে।
নিহতের ভাগিনা এনামুল চৌধুরী পাবেল বলেন, “আমার ফুফুকে কে বা কারা জবাই করে হত্যা করেছে, তা আমরা বুঝতে পারছি না। স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়েছে, তাই ধারণা করা হচ্ছে লুটপাটই মূল উদ্দেশ্য ছিল। আমরা চাই খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।”
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল বাশার জানান, “ঘটনার সময় ভিকটিম রান্না করছিলেন। ধারালো বটি দিয়েই সম্ভবত তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্বর্ণালঙ্কার লুটের উদ্দেশ্যেই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো মোটিভ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত জানানো সম্ভব নয়।”
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে এলাকাজুড়ে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। একদিকে পরিবারের শোক, অন্যদিকে প্রতিবেশীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে কঠোর বিচার নিশ্চিত করা হোক।