
সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে আনোয়ারা উপজেলায় বিক্রি হচ্ছে পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের সিলিন্ডার। বিক্রেতাদের নেই কোনো বিস্ফোরক লাইসেন্স, নেই সংরক্ষণ জ্ঞানও। কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই উপজেলায় ১১ ইউনিয়নের হাটবাজারে, গ্রামীন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব গ্যাস সিলিন্ডার। এসব সিলিন্ডার বিক্রির ফলে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে উপজেলা বিভিন্ন বাজারের, গ্রামীণ এলাকায় দোকানে ঘুরে দেখা গেছে লাইসেন্স বিহীন মুদির দোকান, হার্ডওয়ারের দোকান, ফ্ল্যাক্সি লোডের দোকান,সারের ডিলার, তেলের দোকান, চায়ের দোকান,ইলেকট্রনিকের দোকান এমনকি ওষুধের দোকানেও অবাধে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার।কিছু কিছু দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও অকেজো ও মেয়াদোত্তীর্ণ। ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের মন গড়া ভাবে যেখানে সেখানে গ্যাস সিলিন্ডারের বোতল রেখে ব্যবসা করতেছে। বেশি ভাগ দোকানিও ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা করে আসতেছে। আবার কিছু দোকানে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন, ইনকাম ট্যাক্স ও ভ্যাট প্রদানে বিশাল অভিযোগ পাহাড়।
গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালায় যা আছে:
গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা ১৯৯১ -তে বলা হয়েছে—গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয়ের জন্য কমপক্ষে পাকা ফ্লোরসহ আধা পাকা ঘর থাকতে হবে। ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতা সংক্রান্ত লাইসেন্স ও ছাড়পত্রসহ অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র এক্সস্টিংগুইশার (Extinguisher), মজবুত এবং ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে।
সিলিন্ডার আমদানির বিষয়ে বিধির তৃতীয় পরিচ্ছেদে বলা আছে— লাইসেন্স ছাড়া সিলিন্ডার আমদানি নিষিদ্ধ। কোনও ব্যক্তি বিনা লাইসেন্সে গ্যাসপূর্ণ বা খালি সিলিন্ডার আমদানি করতে পারবেন না।
বিধিমালার সপ্তম পরিচ্ছদে সিলিন্ডারে গ্যাস ভর্তি ও গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার মজুত রাখার বিষয়ে বলা আছে— লাইসেন্স ব্যতীত সিলিন্ডারে গ্যাস ভর্তি ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ। বিধি-৪১ এর বিধান অনুযায়ী কোনও ব্যক্তি বিনা লাইসেন্সে সিলিন্ডারে গ্যাস ভর্তি করতে পারবেন না, অথবা গ্যাসপূর্ণ কোনও সিলিন্ডার তার অধিকারে (মজুত) রাখতে পারবেন না।
বিস্ফোরক পরিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি ও মজুত স্থানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের প্রয়োজন হয়। প্রয়োজন হয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতারও। এ ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স, জ্বালানি অধিদপ্তরের লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়ার বিধানও রয়েছে। কিন্তুু এ নিয়ম এখানে মানা হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। বিস্ফোরক পরিদফতরের নিয়ম অনুযায়ী, খুচরা দোকানে বিক্রির জন্য সর্বোচ্চ ১০টি গ্যাস সিলিন্ডার রাখা যায়। ১০টির বেশি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে হলে বিস্ফোরক পরিদফতরের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। কিন্তু এ উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নের ১০ হাজারোও অধিক দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে দোকানদার । কিন্তু কোনটিই সরকারি নির্দেশনা মানছে না।
এলাকার সচেতন মহল বলছেন, উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নের ব্যাঙের ছাতার মতো যত্রতত্র অবৈধ ভাবে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির দোকান হচ্ছে তাতে যেকোনো মুহূর্তে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন অফিসার বেলার হোসেন জানান, ইদানিং মানুষ এলপি গ্যাসের ব্যবহারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। আনোয়ারা- কর্ণফুলী বাসির জন্য বড় একটা ক্ষতি কারণ হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। গ্যাস সিলিন্ডার যদি বিক্রি করতে হয়, তাহলে সরকারি আইন মোতাবেক পারসোনালিটি একটি দোকানের বা বাজারে দুই /এক জন লোক বিক্রি করতে পারবে।তবে লাইসেন্স, বিস্ফোরক পরিদপ্তর অনুমোদন লাগবে।
এ বিষয়ের উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন জানান, নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব
The post যেকোনো সময় ঘটতে পারে বিস্ফোরণ appeared first on বিজনেস বাংলাদেশ.