জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, ‘যদি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, যদি দেশের দুর্নীতি বন্ধ করা না হয়, যদি দেশের টাকা পাচার বন্ধ না হয়, টেন্ডারবাজি, দলবাজি আর চাঁদাবাজি বন্ধ না হয় তাহলে জাতীয় পার্টি আর রাজপথ ছাড়বে না।’ তিনি আরও বলেন, আমরা গণমানুষের দাবি নিয়ে গণমানুষকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।
বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টি আয়োজিত বিজয় নগর থেকে পল্টন পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চুন্নু এসব কথা বলেন। চাল, ডাল, আটা, সয়াবিন তেল, গ্যাস, পানি, বিদুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সিমাহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে দলটি এই কর্মসূচি পালন করে।
সভায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব আরও বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ এক কঠিন সময় অতিবাহিত করছে, যখন দেশে দ্রব্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সংসার চালাতে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষ করে করোনাকালে যারা কর্মহীন হয়ে পড়েছে তাদের সবার কর্মসংস্থান হয়নি। সব মিলিয়ে দেশে বেকারের সংখ্যা অন্তত ৫ কোটি। এমন বাস্তবতায় যেভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে তাতে মনে হয় দেশের মানুষের প্রতি সরকারের কোনো দরদ নেই। সরকার মানুষের কষ্ট বোঝে না, মানুষের মনের ভাষা বোঝে না।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের অভিযোগ- যারা সরকারি দল করে তারাই শুধু ভালো আছে। দেশে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি আর দলবাজি করে একটি শ্রেণি ধনী থেকে আরও ধনী হচ্ছে। আর দেশের বেশিরভাগ মানুষ দিনদিন আরও গরিব হচ্ছে। মানুষের আয় নেই কিন্তু ব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ।
জাতীয় পার্টি মহাসচিব বলেন, সাধারণ মানুষ প্রতিদিনের বাজার করতে পারছে না, প্রয়োজনীয় অসুধ কিনতে পারছে না। অর্থের অভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারছে না। শুধু অর্থের অভাবে অনেক সন্তান তার বাবা-মার খোঁজ নিতে পারে না। যেখানে দু’মুঠো ভাত তুলে দিতে মানুষকে যুদ্ধ করতে হয়, সেখানে সন্তানের বায়না মেটানো যেন স্বপ্নের মতো।
তিনি বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন রাষ্ট্রক্ষমতা ছেড়ে দেন তখন প্রতি কেজি চালের দাম ছিল ৮ থেকে ১০ টাকা। এখন গেল ৩১ বছরে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়ে বর্তমানে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পল্লীবন্ধুর সময় যে সয়াবিন তেল ২০ থেকে ২৫ টাকা লিটার বিক্রি হয়েছে এখন তা ১৮০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। আবার পেট্রোলের দাম ছিল ৭ থেকে ১০ টাকা লিটার, এখন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার পেট্রোল।
মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। এমন প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন হলে হাহাকার উঠবে দেশের ৯০ ভাগ ঘরে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি আর পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত। এদেশের মানুষ এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে গড়া জাতীয় পার্টি এমন বাস্তবতায় ঘরে বসে থাকবে না। আমরা মানুষের সব অধিকার সুরক্ষিত করতেই রাজনীতি করছি। আমরা মাঠে আছি, মাঠে থাকব। গণমানুষের স্বার্থ রক্ষার আন্দোলনে আমরা কখনো আপস করব না।
সভায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেছেন, জাতীয় পার্টি মানুষের সঙ্গে আছে বলেই আমরা মানুষের কষ্ট বুঝতে পারি। মানুষের পকেটে টাকা নেই, পেটে ভাত নেই। এমন বাস্তবতায় জাতীয় পার্টি ঘরে বসে থাকতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, সংসার চালাতে দেশের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। এ সময় আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। আমরা মানুষের জন্য রাজনীতি করছি। আমরা মানুষের জন্যই রাজপথে থাকব। সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষ আবার জাতীয় পার্টির শাসনামলে ফিরে যেতে চায়।
সভায় আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, এসএম ফয়সাল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, মো. এমরান হোসেন মিয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা জহিরুল ইসলাম রুবেল, ভাইস-চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, আহসান আদেলুর এমপি, নুরুল ইসলাম ওমর, তারেক এ আদেল, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ফখরুল আহসান শাহজাদা, মো. বেলাল হোসেন, জাতীয় শ্রমিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, জাতীয় যুব সংহতির সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিন, জাতীয় ওলামা পাটির আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ ইরফান বিন তোরাব আলী, জাতীয় মৎস্যজীবী পার্টির সদস্য সচিব মীর সামসুল আলম লিপটন, জাতীয় ছাত্রসমাজের সভাপতি মো. ইব্রাহীম জুয়েল।
উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, ফখরুল ইমাম এমপি, সুনীল শুভ রায়, নাজমা আক্তার এমপি, উপদেষ্টা রওশন আরা মান্নান এমপি, ড. নূরুল আজহার শামীম, নূরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, সরদার শাহজাহান, মো. হারুন অর রশিদ, অ্যাডভোকেট লাকি বেগম, হেনা খান পন্নী, নাজনীন সুলতানা, জহিরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা রানী, শেখ আলমগীর হোসেন, মোস্তফা আল মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম সরু, শফিকুল ইসলাম শফিক, আমিনুল ইসলাম ঝন্টু, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, আমির উদ্দিন আহমেদ ডালু, যুগ্ম মহাসচিব আবদুল হামিদ ভাসানী, একেএম আশরাফুজ্জামান খান, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, কেন্দ্রীয় নেতা মো নাসির উদ্দিন সরকার, মো হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুল ইসলাম, হুমায়ূন খান, এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, আনিস উর রহমান খোকন, মাখন সরকার, মাসুদুর রহমান মাসুম, এমএ রাজ্জাক খান, শাহাদাৎ কবির চৌধুরী, মিজানুর রহমান মিরু, এসএম আল জুবায়ের, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভুঁইয়া, গোলাম মোস্তফা, খোরশেদ আলম খুশু, তিতাস মোস্তফা, আজহারুল ইসলাম, সরকার, সুজন দে, দেলোয়ার হোসেন মিলন, আখতার হোসেন দেওয়ান, এসএম সোবহান, শরফুদ্দিন শিপু, শেখ মাসুক রহমান, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, সাহিদ হোসেন সেন্টু, শাহজাহান কবীর, ডা. সেলিমা খান, দ্বীন ইসলাম শেখ, শাহনাজ পারভীন, ফরিদ উদ্দিন, হাফেজ ক্বারী ইসারুহুল্লা আসিফ, ইব্রাহিম আজাদ, মনিরুজ্জামান টিটু, আবু সাঈদ স্বপন, রিতু নূর, মো. শামসুল হক হুদা, শেখ মো. সরোয়ার, নাসিম উদ্দিন বায়জিদ, মোক্তার হোসেন, আবদুল বাতেল, লোকমান ভূঁইয়া রাজু, আরিফুল ইসলাম রুবেল, হুমায়ূন কবির শাওন, আবুল কালাম আজাদ, মো. আলমগীর হোসেন, কাজী মামুন, মো. ইলিয়াস আলী, তাসলিমা আকবর রুনা, জেসমিন নূর প্রিয়াংকা, জায়েদুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার খোরশেদ আলম, জিয়াউর রহমান বিপুল, মিনি খান।