গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম হামলা অব্যাহত রয়েছে। নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান ও স্থল হামলায় আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আল জাজিরার বরাতে জানা গেছে, এসব হামলায় আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
যুদ্ধবিরতির কোনো তোয়াক্কা না করে তেলআবিবের ফাইটার জেট ও ভারী যুদ্ধযানগুলো একের পর এক বোমাবর্ষণ করছে গাজার বিভিন্ন স্থানে। বিশেষ করে দেইর আল বালাহ ও খান ইউনিস এলাকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর টার্গেটেড স্ট্রাইকগুলোতে বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার ভোর থেকে শুরু করে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব হামলার ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণ হারিয়েছে শিশু, নারী ও বয়স্ক সহ অসংখ্য নিরীহ নাগরিক।
ইসরায়েল গত ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ইসরায়েল ফের হামলা শুরু করে, মূলত গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার ইস্যুতে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে। এরপর থেকেই আগ্রাসনের মাত্রা বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে।
গাজায় খাদ্য ও ওষুধের তীব্র সংকটের কথা জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP)। সংস্থাটি বলছে, হাজার হাজার মানুষ বর্তমানে চরম ক্ষুধা ও অপুষ্টির শিকার। অপরদিকে, জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (UNRWA) উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, গত তিন সপ্তাহে গাজায় কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা পৌঁছায়নি, যা অবস্থা আরও বিপজ্জনক করে তুলছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে চালানো ইসরায়েলি হামলায় ১ হাজার ৩৯১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৩ হাজার ৪৩৪ জন আহত হয়েছেন।
গেল দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই আগ্রাসনে ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৪ লাখ ফিলিস্তিনি। আন্তর্জাতিক মহল এ মানবিক সংকটের দ্রুত সমাধান চাইলেও ইসরায়েলের একতরফা আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতার মধ্যে বিশাল ফারাক থেকেই যাচ্ছে। যতদিন না গাজায় টেকসই শান্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়, ততদিন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।