বাংলা নববর্ষের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী আয়োজন ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম পরিবর্তন করে এখন থেকে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ রাখা হয়েছে। শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম জানান, এবারের শোভাযাত্রায় ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে এটি সকলের জন্য আনন্দময় করে তোলা হবে ।
সম্প্রতি ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামটি নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক ও আলোচনা শুরু হয়। অনেকেই মনে করেন, ‘মঙ্গল’ শব্দটি সর্বজনীন নয় এবং এটি দেশের সকল ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না। এই প্রেক্ষাপটে নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও নাম পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ।
‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র সূচনা হয়েছিল ১৯৮৯ সালে, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের অংশ হিসেবে। ২০১৬ সালে এটি ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এর নাম ও প্রতীক নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়, যা নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে ।
এবারের শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। এই প্রতিপাদ্য ধারণ করে শোভাযাত্রায় তুলে ধরা হবে আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। সেই সঙ্গে গত বছরের রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতিফলনও এতে দেখা যাবে ।
নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহলে সমালোচনাও দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী নাম, যা পরিবর্তন না করাই উচিত ছিল। তবে আয়োজকরা বলছেন, নতুন নামের মাধ্যমে শোভাযাত্রাকে আরও সর্বজনীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করা সম্ভব হবে।