খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)-এ ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের জেরে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতের সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে, আগামী ২ মে থেকে আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে এবং ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সিন্ডিকেটের ১০১তম (জরুরি) সভায় সংঘর্ষ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন ও গৃহীত হয়। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণে বিষয়টি ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এসব সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ করেছেন, সিন্ডিকেট সভা শেষে কারো সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই প্রশাসনের কর্মকর্তারা পিছনের ফটক দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেছেন। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে আবাসিক হল খোলার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন, তবে সোমবার রাত থেকেই হল খুলে দেওয়ার দাবি থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, হল বন্ধ থাকায় তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকের টিউশনি বন্ধ হয়ে গেছে, লেখাপড়াও ব্যাহত হচ্ছে। তারা ঘোষণা দিয়েছেন, হল খোলার আগ পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে শতাধিক আহত হন। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করে।
বিশ্লেষকদের মতে, ছাত্র রাজনীতি এবং এর প্রভাব নিয়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক রয়েছে। এই ঘটনাও তারই একটি প্রতিফলন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষা জীবন রক্ষায় প্রশাসনের উচিত ছিল আরও স্বচ্ছতা ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের যৌক্তিক দাবিগুলো বিবেচনা করাও জরুরি বলে মনে করেন অভিভাবকরা।