আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি চাই কাজের ক্ষেত্রে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য যেন আর না থাকে।”
চামড়া শিল্পকে উন্নত করে আরও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে চামড়া শিল্প উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার এ খাতের এক প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি আমলাতান্ত্রিক জটিলতার লাল ফিতা থেকে বেরিয়ে আসতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বানও জানান। তিনি বলেছেন, “আমি চাই কাজের ক্ষেত্রে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য যেন আর না থাকে।”
ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার গুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো-ব্লিস ২০২৩ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী চামড়া খাতের উন্নয়ন এবং রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজার খোঁজাসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন।
এ খাতের ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী পৃথক চামড়া শিল্প উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন এবং এ শিল্পের জন্য আরও ১০০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণাও দেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “পরিবেশগত দিক বিবেচনায় ট্যানারি শিল্পকে আমরা সাভারে স্থানান্তর করেছি। সেটাকে আরও উন্নত করে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন করব। চামড়া শিল্প উন্নয়নের জন্য ‘চামড়া শিল্প উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ আমরা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অধীনে করে দেব, সেই ঘোষণা করছি।
“ছোটখাটো সমস্যা যেন আর না হয় সেজন্য এখন সাভারে করেছি, পরবর্তীতে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে অঞ্চলভিত্তিক ট্যানারি শিল্প গড়ে তুললে চামড়ার ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। এটাকে আমরা বড় করে তুলব।”
দেশের চামড়া শিল্পকে রপ্তানির সম্ভাবনমায় খাত হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে ধরা হচ্ছে। পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলে আন্তর্জাতিক কমপ্লায়েন্সের শর্ত পরিপালনে ঢাকার হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলোকে সাভারে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তবে দীর্ঘ সময়েও সেই চামড়া শিল্প নগরী এখনও পরিপূর্ণভাবে পরিবেশ ও শিল্পবান্ধব হিসেবে গড়ে ওঠেনি।
বিপুল বিনিয়োগে শিল্প নগরী স্থাপন হলেও সেখানে বর্জ্য নিষ্কাশনের জটিলতা রয়েই গেছে। যে কারণে শিল্প উদ্যোক্তারা স্বতন্ত্র বিশেষ কর্তৃপক্ষ গঠনে গত কয়েকদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এ কর্তৃপক্ষের অধীনে চামড়া শিল্পনগরী উন্নয়ন ও তা পরিচালনায় দায়িত্ব দেওয়ার দাবি তোলেন তারা।
তিন দিনের এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সেই কর্তৃপক্ষ গঠনের ঘোষণা এল।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের নীতিমালা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। তিন বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব হবে ২০২৫ সালে। পাদুকা ছাড়া অন্যান্য পণ্যে চামড়ার ব্যবহার বাড়ানোর নজর দিতে হবে।
“২০৩০ সালে যেন ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয় সেটা আমি চাই। চামড়া পণ্য ও পাদুকা শিল্প গড়ে তোলার জন্য অন্তত ১০০ একর জমি বরাদ্ধ থাকবে। এখানে একজন উদ্যোক্তাকে আমরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে বরাদ্দ দিব,” বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, “আমাদের প্রচলিত লাল ফিতা ধারণা সেটার অবসান হলে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে, দেশ আরও উন্নত হবে। আমাদের একটা মানসিকতা আছে যে, আমলারা ভাবেন যে আরেকটু টাইট দিতে পারলে বোধহয় সব ভালো হবে, সবসময় সেটা ভালো হয় না।