মেয়ে

0
491

আমার আত্মা হতে জাত তুই,মেয়ে,
হৃদয়ের গভীর হতে তোর জন্ম নেয়া,
অবিনশ্বর অনুভূতিতে আছিস ছেয়ে
তোর জন্যই এ জীবন বিলিয়ে দেয়া।
শরীরের থেকে একটু একটু করে
রক্ত-মাংস-চামড়ার ফুল ফোটা
আমারই আরেক আপন সত্তা তুই
তোরই জন্য এ ‘জননী’ হয়ে ওঠা।
শূককীট যেন তুই এক খোলস পরা-
এগিয়ে যাস রাঙা প্রজাপতি হতে
তোর আশাতে আমি বুক বেঁধে রই-
আমার স্বপ্ন বেঁচে ওঠে তোর পথে।
তবু কুৎসিত কিছু আশঙ্কা হয়,
দুরু দুরু বুকে এ প্রাণ কাঁপে কেন!
পথের ওপর অশুভর নিঃশ্বাস
বাঁকে বাঁকে দেখি শকুনের ছায়া যেন।
সুরক্ষিত আবরণ গড়ে দেবো
তোর চারপাশে রেশম মথের মতো
নিজের যা কিছু দেবই বিসর্জন
ঠেকিয়ে রাখব কালছায়া আছে যত।
যতদিনে তুই কঠিন পাথর হয়ে
আঘাত বদলা আঘাত শিখে যাবি-
ছোঁয়াচ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে তোকে
ঠিক ততদিন আমায় পাশে পাবি।
চাইনা তুই এক প্রজাপতি হ
রঙিন ঝিলিক দিগন্ত আলো করে,
ভীমরুল বা বোলতার মতো সেই
ছিপছিপে সৌন্দর্যে গড়ব তোরে ।
নাশ করিস যত অযাচিত অশুভ
যেন এক ঠোকরে ঢালিস হলাহল
নিপাত যাক লোলুপতায় ভরা
ঘিরে থাকা যতো নরপশুর দল ।
ততদিন পর্যন্ত যদি কোনভাবে
বাঁচিয়ে রাখতে পারি আমি এই তোকে
এক সুন্দরী তন্বী নয়রে, মাগো
তোর সফলতা দেখতে চাই দু’চোখে।
শিক্ষা, বুদ্ধি ও শক্তিতে দশভূজা
হয়ে ওঠ তুই প্রতিক্ষণ-রোজদিনে,
ধ্বংস করিস চারদিকে যত মন্দ
নরকের নীচ কীট পতঙ্গকে চিনে।
ঠিক ততোদিন পর্যন্ত যদি,মাগো,
পারি যদি আমি বাঁচিয়ে রাখতে তোকে-
মেয়ে থেকে তুই ‘মানুষ’ হয়ে উঠিস
মরার আগে দেখে যেতে চাই চোখে।
চোখ পেতে রই আশায় ভরা পথে-
জিতব কবে সেই অনাগত দিনে
সেদিন তোকে শুধুই ‘মেয়ে’ নয়,
পুরো মানুষের অবয়বে নেবো চিনে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here