লাইলাতুল কদর মানবজাতির অত্যন্ত বরকতময়

0
11

পবিত্র রমজান মাস চলছে। এই মাস মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ ছাড়া মহিমান্বিত এই রমজান মাসে রয়েছে শ্রেষ্ঠ রাত। লাইলাতুল কদরের রাত। রমজান মাসের শেষ বিজোড় রাত্রির যেকোনো এক রাত হয় লাইলাতুল কদর। পবিত্র এই রাতে নাজিল হয়েছিল মুসলিমদের সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ পবিত্র কোরআন। তাই এই রাতের কদর বেশি। প্রত্যেক মুসলমানরা সারা রাত দোয়া প্রার্থনা, জিকির করেই এই রাত যাপন করেন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা ‘কদর’ নামে একটি সুরা নাজিল করেছেন। সুরায় উল্লেখ রয়েছে, ‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। ’ এই লাইলাতুল কদরের রাতে আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের ক্ষমা করেন এবং হজরত জিবরাইল (আ.)-সহ রহমতের ফেরেশতারা পৃথিবীতে আগমন করেন।

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মাঝে রমজান আগমন করেছে। তাতে রয়েছে এমন রাত, যা হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। যে সে রাত থেকে বঞ্চিত হলো, সে কল্যাণ থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হলো। আর হতভাগা ব্যক্তি ছাড়া কেউ তার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয় না। -সুনানে ইবনে মাজাহ।

হজরত মুহাম্মদ (সা.) শবে কদরের রাতে ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আজকার করতেন। তিনি আত্মিক সাধনার মাধ্যমে কদরের রাত ও তার কল্যাণ অনুসন্ধান করতেন। রমজান মাসের শেষ ১০ রাতে তিনি সব ধরনের জাগতিক কাজকর্ম থেকে অবসর নিয়েছেন এবং আল্লাহর ইবাদতে আত্মনিয়োগ করতেন। এ রাতে রাসুল (সা.) অধিক পরিমাণ নামাজ আদায় করতেন। রাত্রী জাগরণ করতেন। সাহাবাদেরও নামাজ আদায় করতে বলতেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত মুহাম্মদ (সা.) প্রত্যেক রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন এবং মৃত্যুর বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফ করেন। -সহিহ বোখারি

হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর উম্মতকেও রমজানের শেষ দশকে কদরের রাত অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর। ’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম

রমজান মাসের ২৭ তারিখের রাতে শবে কদর হওয়ার ব্যাপারেও বর্ণনা রয়েছে। হজরত মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ান (রা.) থেকে বর্ণিত-হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘কদরের রাত হলো- সাতাশের রাত। ’ -সুনানে আবু দাউদ

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিশ্বাস ও নিষ্ঠার সঙ্গে কদরের রাতে নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তার পেছনের সব পাপ মার্জনা করবেন। ’ -সহিহ বোখারি ও মুসলিম

হজরত মুহাম্মদ (সা.) রমজানে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করতেন। কদরের রাতে তেলাওয়াতের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিতেন। হজরত ফাতেমা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তার পিতা তাকে বলেছে, প্রতি রমজানে জিবরাইলকে (আ.) একবার কোরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন। কিন্তু মৃত্যুর বছর তিনি তাকে দু’বার কোরআন শোনান। ’ -সুনানে বায়হাকি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here