অন্যের সুখ সবাই সইতে পারে না। অন্যের সুখ আপনার কোনো ক্ষতির কারণ নয়, তবু হয়তো আপনি তা মেনে নিতে পারেন না। আপনি যদি এমন প্রকৃতির হয়ে থাকেন, তাহলে জেনে রাখুন, এই দলে আপনি একা নন; আরও অনেকেই আছেন। এই খারাপ লাগাই হলো মানবমনের এক অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য।
রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী শারমিন হক বলেন, ‘মানবমনের একটা অংশের তাড়না থাকে—যা আমি চাই, তা আমাকে পেতেই হবে। অন্যের সঙ্গে যখন এমন কোনো দারুণ ঘটনা ঘটে, যা আপনি নিজের জন্য চাইছেন কিন্তু পাচ্ছেন না, তখন আপনার মনে নেতিবাচকতা সৃষ্টি হতে পারে। এটি একেবারেই অস্বাভাবিক কিছু নয়। এমনকি ওই ব্যক্তি যদি আপনার বন্ধুও হন, তবু সাময়িক ঈর্ষায় ছেয়ে যেতে পারে আপনার মন।’
সবাই স্বাভাবিকভাবে সবকিছুকে গ্রহণ করতে পারেন না। তবে কেউ তা প্রকাশ করেন, কেউ করেন না। যে কারও সুখের সংবাদে এই নেতিবাচক অনুভূতি থেকে নিজেকে আপনি বের করে আনার চেষ্টা করছেন কি না, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। হিংসার বশবর্তী হয়ে অন্যের ক্ষতি করে ফেলারও বহু নজির সমাজে রয়েছে। ঈর্ষান্বিত বোধ করলে তা থেকে বের হয়ে আসার কৌশলও রয়েছে। যে যা পেয়েছে, তা তো পেয়েছেই। আপনি বরং উদ্যমী হয়ে নিজেকে আরও ভালো অবস্থানে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
বন্ধু এক সেমিস্টারে ভালো ফল করেছেন, আপনি নাহয় পরেরবার দ্বিগুণ পরিশ্রম করুন। অবশ্যই মনে রাখবেন, সবার মেধা ও স্মৃতিশক্তি এক রকম নয়। তাই নিজের সাধ্যের সবটা দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যান। কেউ পারিবারিক জীবনে সুখী, আপনি হয়তো তেমন সুখী নন। নিজের পারিবারিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য কী করা যায়, সেটা ভাবুন। নিজের ভুলত্রুটিগুলো শুধরে নিন। অন্যের খবরটি শোনার পর নিজের মধ্যে কী কী ঘাটতি আছে, খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। অনেক সময় এই তুলনা থেকে নিজেকে হয়তো খানিকটা এগিয়েই রাখলেন, অন্যদের মতামত থেকেও নিজেকে মূল্যায়নের চেষ্টা করুন।