লাজফার্মার বিরুদ্ধে ভেজাল পণ্য বিক্রির অভিযোগ: ভোক্তাদের ক্ষোভ, তদন্তের দাবি

0
6

রাজধানীর মগবাজার পুনাক সেন্টারের লাজফার্মা শাখা থেকে ক্রয় করা একটি প্রিঙ্গেলস চিপসে ভেজাল পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন লেখক ও সাংবাদিক ইশতিয়াক আহমেদ। তার সন্তান ওই চিপস খাওয়ার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। একই অবস্থা হয় তার স্ত্রীরও। তিনি এই অভিজ্ঞতা ফেসবুকে শেয়ার করলে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেকেই মন্তব্য করে তাদের একই ধরনের অভিজ্ঞতা জানাতে থাকেন।

কী ঘটেছিল?

গত সপ্তাহে উত্তরা থেকে ফেরার পথে ইশতিয়াক আহমেদ লাজফার্মার মগবাজার শাখা থেকে তার সন্তানের জন্য কিটকাট ও একটি ছোট প্যাকেট প্রিঙ্গেলস চিপস কেনেন। বাসায় ফিরে সন্তান সেটি খাওয়ার পর প্রচণ্ড বিরক্ত হয় এবং মুখে অন্য কিছু নিতে পারে না। পরে তার স্ত্রীও একই সমস্যার সম্মুখীন হন। ইশতিয়াক নিজেও খেয়ে দেখেন এবং জানান, চিপসটির স্বাদ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে মনে হচ্ছিল এটি বিষাক্ত।

তিনি জানান, প্রথমে ফোনে লাজফার্মার ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু ইশতিয়াক সরাসরি লাজফার্মার শাখায় গিয়ে বিষয়টি জানালে কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে যে একই ধরনের আরেকটি অভিযোগ তারা পেয়েছেন। তাদের ভাষ্যমতে, লাজফার্মা প্রিঙ্গেলস কোম্পানির বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকারে মামলা করবে।

লাজফার্মার প্রতিক্রিয়া

লাজফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফর রহমান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছেন। পণ্যটির পাইকারি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রুবেল ট্রেডার্সকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট প্রিঙ্গেলস পণ্য সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ভোক্তাদের মধ্যে ক্ষোভ

এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, লাজফার্মা শুধু ফার্মেসি নয়, প্রসাধনী ও খাদ্যপণ্য বিক্রিও করে, কিন্তু এসব পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগ নেয় না। অনেকেই কমেন্টে লিখেছেন, তারা লাজফার্মা থেকে নিম্নমানের বা ভেজাল পণ্য পেয়েছেন, কিন্তু অভিযোগ জানিয়ে কোনো প্রতিকার পাননি।

ভোক্তা অধিকার ও প্রতারণার অভিযোগ

বাজারের অন্যতম পরিচিত ফার্মেসি লাজফার্মার বিরুদ্ধে এর আগেও মানহীন ওষুধ বিক্রি এবং দুর্ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। অনেক গ্রাহক জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা প্রায়ই অসহযোগিতা করেন।

এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, লাজফার্মা তাদের ব্র্যান্ড নাম দিয়ে অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজ বিক্রি করেছে, যেখানে মান নিয়ন্ত্রণের কোনো যথাযথ ব্যবস্থা রাখা হয়নি। শুধু অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে ফার্মেসির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, অথচ গ্রাহকের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষিত।

সরকারি তদন্তের দাবি

ভোক্তারা এখন চাচ্ছেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত তদন্ত করে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়।

বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে খাদ্য ও ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ ধরনের ঘটনার দ্রুত সমাধান ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।


LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here