(বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার বিচারের প্রসঙ্গ নতুন করে আলোচনায় এসেছে, বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর।)
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই দাবি করেন।
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “শুধু শেখ হাসিনাই নন, তার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তির বিচার হবে। এ ধরনের অপরাধের বিচার না হলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে না।”
ভারতের ভূমিকা ও আন্তর্জাতিক আইন
ড. ইউনূসের বক্তব্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা বর্তমানে বাংলাদেশে নেই এবং তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক আইন ও ভারতের সহযোগিতার প্রয়োজন হতে পারে। তিনি বলেন, “আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতকে জানিয়েছি। এখন ভারতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।”
গুম, নির্যাতন ও ‘আয়না ঘর’ প্রসঙ্গ
সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে কথিত ‘আয়না ঘর’-এর প্রসঙ্গ, যেখানে গুম ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের আটকে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ড. ইউনূস বলেন, “যদি কেউ নিজের চোখে আয়না ঘরগুলো দেখে এবং নির্যাতিতদের সঙ্গে কথা বলে, তবে বুঝতে পারবে কত বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এই ‘আয়না ঘর’গুলো সেনাবাহিনীর আওতাধীন থাকায় সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। তবে সরকার পরিকল্পনা করছে এগুলোকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করার, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারে।
শেখ হাসিনার প্রতিক্রিয়া
তবে শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তার দাবি, তিনি রাজনৈতিকভাবে নিপীড়নের শিকার এবং বর্তমান সরকার তার বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন পথে?
বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার বিচারের বিষয়টি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। একদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ, অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রতিশোধের আশঙ্কা—এই দুইয়ের মাঝে সত্য উদঘাটন কতটা সম্ভব হবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।