ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরল খনিজ সম্পদ চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত। রবিবার (৩ মার্চ) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ল্যাংকেস্টার হাউসে ইউক্রেন সংকট নিয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ওয়াশিংটনে উত্তপ্ত বৈঠক, বাতিল যৌথ সংবাদ সম্মেলন
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, গত শুক্রবার (১ মার্চ) ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠক হয়। সেখানে বিরল খনিজ সম্পদ চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা ছিল। তবে বৈঠকের একপর্যায়ে দুই নেতার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়, যা শেষ পর্যন্ত বাগবিতণ্ডায় রূপ নেয়।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে—যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয় এবং জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস ছাড়তে বলা হয়।
যুক্তরাজ্যে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেলেন জেলেনস্কি
ওয়াশিংটনের ঘটনাবলীর একদিন পর যুক্তরাজ্যে সফর করেন জেলেনস্কি। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে খনিজ চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জেলেনস্কি বলেন—
“চুক্তিটি মন্ত্রীদের স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আমরা এটি স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত।”
তিনি আরও যোগ করেন—
“টেবিলে যে চুক্তিটি রয়েছে, তা স্বাক্ষর হবে যদি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো প্রস্তুত থাকে।”
ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব
এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রো ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেনে এক মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এনেছেন।
সংবাদমাধ্যমের এক প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি জানান—
“আমি বিষয়টি সম্পর্কে সবকিছুই জানি।”
যুক্তরাজ্যের চার দফা পরিকল্পনা
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ও দেশটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
স্টারমার বলেন—
“যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশ মিলে একটি ‘সম্মতদের জোট’ গঠন করা হবে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রকেও অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করা হবে।”
ইউরোপের শীর্ষ সম্মেলন ও জেলেনস্কির প্রতিক্রিয়া
লন্ডনে ১৮টি ইউরোপীয় দেশের নেতাদের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জেলেনস্কিও উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন—
“আজ আমরা ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি।”
জেলেনস্কি জানান,
“ইউক্রেন শক্তিশালী সমর্থন অনুভব করছে, এবং এই সম্মেলন ইউরোপের অভূতপূর্ব সংহতি প্রকাশ করছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ইউক্রেন তার অর্থনৈতিক ও সামরিক সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে চায়।