জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ২১৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদিত

0
17

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শনিবার রাতে দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের স্বাক্ষরিত এক পত্রে ২১৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্তি পায়। তবে শহীদ মিনারে ঘোষিত এক দফার মূল উদ্দেশ্য—ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ—এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। স্বাধীনতার দীর্ঘ পরিক্রমায় দেশটি নানা রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেলেও প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অভাব ছিল।

জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা বলছেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার মাধ্যমে মুক্তি অর্জন করলেও পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালের সংবিধানের ভিত্তিতে গঠিত রাষ্ট্রকাঠামো একচ্ছত্র শাসনের পথ উন্মুক্ত করেছে। এর ফলে জনগণ বারবার স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী শাসনের শিকার হয়েছে। এই বাস্তবতায় জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ ঘটে।

নতুন রাজনৈতিক দলটি আগামী এক বছরের মধ্যে দলের গঠনতন্ত্র ও ইশতেহার প্রণয়ন, কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং সাংগঠনিক বিস্তার কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।

নতুন কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন। এছাড়াও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে সামান্তা শারমিনআরিফুল ইসলাম আদীব দায়িত্ব পালন করবেন। যুগ্ম আহ্বায়কদের মধ্যে আছেন নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারমিন, মাহবুব আলম, সারোয়ার তুষার, অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিনসহ অনেকে।

সদস্যসচিব পদে আছেন আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারানাহিদা সারওয়ার নিভা। দলটির সাংগঠনিক কাঠামোতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তাদের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে আব্দুল হান্নান মাসউদ দায়িত্ব পেয়েছেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টি মূলত বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামো থেকে ফ্যাসিবাদী শাসনের সকল উপাদান বিলোপ করে জনগণের প্রত্যাশিত গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। দলটির নেতারা বলছেন, তাদের আন্দোলন মূলত সাধারণ নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।

বিশ্লেষকদের মতে, দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ নতুন মাত্রা যোগ করবে। দলটি কতটুকু জনসমর্থন অর্জন করতে পারবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here