বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন। তার বিদায়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন তরুণ ক্রিকেটাররা।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলার পর থেকেই ভক্ত-সমর্থকদের পাশাপাশি সতীর্থ ও তরুণ ক্রিকেটারদের কাছ থেকে আবেগঘন প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে জাতীয় দলে নতুন আসা তরুণ ক্রিকেটাররা তার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন।
হৃদয়ের চোখে মাহমুদউল্লাহ ‘পেইন-কিলার’
২০২৩ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া তাওহিদ হৃদয় শৈশব থেকেই মাহমুদউল্লাহর খেলা দেখে বড় হয়েছেন। ফেসবুকে দেওয়া এক আবেগঘন স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন,
“ছোটবেলায় টিভির সামনে বসে দেখা প্রত্যেকটা ব্রিলিয়ান্ট মুহুর্তের জন্য ধন্যবাদ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাই। সবাই আপনাকে সাইলেন্ট কিলার ডাকলেও, আমাদের বন্ধুমহলে আপনার নাম ছিলো ‘পেইন-কিলার’। এমন অনেক ম্যাচ আছে যেগুলোর শেষ মুহূর্তের রিলিফ আপনার থেকে উপহার পেয়েছি।”
হৃদয় আরও লেখেন, “আমার দোয়ায় থাকবেন আপনি, যেমনটি সবসময় ছিলেন। অবসর জীবনের জন্য শুভকামনা!”
তানজিদের অনুপ্রেরণা মাহমুদউল্লাহ
হৃদয়ের মতোই ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া তানজিদ হাসান তামিমও স্মরণ করেছেন শৈশবের স্মৃতি। তিনি মাহমুদউল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লেখেন,
“বাংলাদেশ ক্রিকেটে আপনার অসাধারণ প্রতিটি মুহূর্তের জন্য ধন্যবাদ প্রিয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাই। শৈশবে ক্রিকেটে দেখা আপনার অসাধারণ সব মুহূর্তই আমার বর্তমানে ক্রিকেটার পরিচয়ের পেছনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।”
তানজিদ আরও বলেন, “পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকা, ছোটভাইয়ের মতো সবসময় আমাকে আগলে রাখা, আদর, যত্ন—সবকিছুর জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনার পরবর্তী অধ্যায় হোক আরও দুর্দান্ত।”
রিশাদের চোখে মাহমুদউল্লাহ কিংবদন্তি
জাতীয় দলের আরেক উদীয়মান ক্রিকেটার রিশাদ হোসেন মাহমুদউল্লাহকে কিংবদন্তি আখ্যা দিয়ে লেখেন,
“একটি যুগের পরিসমাপ্তি! মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। আপনার ত্যাগ-তিতিক্ষা ও লাল-সবুজ জার্সিতে ভোলার মতো নয় এমন পারফরম্যান্স উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনি সবসময়ই কিংবদন্তি।”
বাংলাদেশ ক্রিকেটের নীরব নায়ক
শান্ত স্বভাব, ধৈর্য, এবং চাপে ঠান্ডা মাথায় খেলার দক্ষতার জন্য মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ‘সাইলেন্ট কিলার’ বলা হতো। ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া এই ক্রিকেটার ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাফল্যের অন্যতম কারিগর ছিলেন। তার বিদায়ে শুধু তরুণ ক্রিকেটাররাই নয়, পুরো বাংলাদেশ ক্রিকেটেই এক শূন্যতা অনুভূত হচ্ছে।
অবসরের পর নতুন অধ্যায়ে পা রাখলেও, তরুণদের কাছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আজীবন অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন।