জেলেনস্কি কে গাছে উঠিয়ে এখন কি মই কেড়ে নিচ্ছে আমেরিকা?

0
11

যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে যুদ্ধবিরতি এবং খনিজ সম্পদ হস্তান্তর সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে সেই বৈঠক শেষ হয় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মধ্য দিয়ে, এবং কোনো চুক্তি ছাড়াই ইউক্রেন ফিরে যান জেলেনস্কি।

স্থানীয় সময় শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে বৈঠক চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স ও জেলেনস্কির মধ্যে প্রথম উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। ভ্যান্স বলেন, “রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর জন্য এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কূটনৈতিক তৎপরতা।” তার জবাবে জেলেনস্কি কটাক্ষ করে বলেন, “আপনি কোন ধরনের কূটনীতির কথা বলছেন, জেডি?”

জবাবে ভ্যান্স বলেন, “আমি সেই কূটনীতির কথা বলছি, যা আপনার দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।” এরপরই বিতর্ক আরও তীব্র হয়, যখন জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দেন, “আমরা একজন খুনির (পুতিন) সঙ্গে কখনো সমঝোতায় যাব না।”

এসময় বিতর্কে যোগ দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি জেলেনস্কিকে সরাসরি বলেন, “আপনার হাতে এখন কোনো কার্ড নেই। যদি আমাদের সঙ্গে থাকেন, তাহলে আপনার হাতে কার্ড আসতে শুরু করবে।” জেলেনস্কি কড়া জবাব দিয়ে বলেন, “আমি কোনো কার্ড খেলছি না, আমি অত্যন্ত সিরিয়াস, মিস্টার প্রেসিডেন্ট।”

তবে ট্রাম্প তার বক্তব্যে অনড় থেকে বলেন, “আপনি কার্ড খেলছেন, এবং শুধু তাই নয়, লাখ লাখ মানুষ ও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়েও জুয়া খেলছেন।”

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, “আপনাকে সমঝোতায় আসতে হবে। যদি তা না করেন, তাহলে আমরা সরে যাব। আর আমরা সরে গেলে এই যুদ্ধ আপনাকে একা লড়তে হবে, যা আপনার জন্য ভালো হবে না।”

জেলেনস্কি এই প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দেন এবং স্পষ্ট করেন যে তিনি পুতিনের সঙ্গে কোনো আপস করতে রাজি নন।

বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টদের যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়। পরে ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, “আজ হোয়াইট হাউসে অর্থবহ বৈঠক হয়েছে। এত চাপ ও উত্তেজনার মধ্যে অনেক কিছু শেখা গেছে। জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত নন। আমি সুবিধা চাই না, শান্তি চাই।”

ট্রাম্প আরও বলেন, “তিনি (জেলেনস্কি) যখন সত্যিই শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন তিনি আবার আসতে পারেন। কিন্তু আজ তিনি হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করেছেন।”

এই বৈঠক ব্যর্থ হওয়ায় ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ যুদ্ধ কৌশল ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অবস্থান আরও কঠিন হয়ে পড়তে পারে। এখন দেখার বিষয়, জেলেনস্কি ভবিষ্যতে কী কৌশল গ্রহণ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্র এই পরিস্থিতিতে কী অবস্থান নেয়।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here