আহ্বায়ক কমিটিতে আটকা রায়পুর ছাত্র-যুব ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ

0
130

আহ্বায়ক কমিটিতেই ঘুরপাক খাচ্ছে রায়পুরে আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো। বছরের পর বছর গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হচ্ছে না। এতে নতুন নেতৃত্বও তৈরি হচ্ছে। এতে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে।

২০১৮ সালে কলেজ ও পৌরসভা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। গত বছর সাবেক সভাপতিকে আহ্বায়ক করে আবারও উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সময় দেওয়া হয় তিন মাস। বছর শেষ হলেও মূল কমিটির দেখা নেই।

সবশেষ ২০১৮ সালে রায়পুর পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সেই কমিটি আজও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। ২০১৬ সালে তিন মাসের সময় দিয়ে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটি হয়। সেই তিন মাস আজও শেষ হয়নি!

সাড়ে ১৮ বছর পর গত ৩১ মে আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষে উপজেলার নতুন কমিটিতে স্থান পান স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের ৫ নেতা।

এ সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন না হওয়ায় নতুন পদপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে দিন দিন। কবে নাগাদ সম্মেলন হবে এবং কমিটি হবে সেটিও নিশ্চিত নয় কেউ। দলের এমন অবস্থায় হতাশ তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ-অসন্তোষ।

ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি: তিন মাসের জন্য ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে শরিফ হোসেনকে আহ্বায়ক ও নিশানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কলেজ শাখা কমিটি হয়। একই বছরের আগস্ট মাসে বর্তমানে পৌরসভার কাউন্সিলর রিজভিকে আহ্বায়ক ও রায়হানকে ১ম ও ফরহাদকে ২য় যুগ্মআহ্বায়ক করে ১৫ সদস্যের পৌরসভার আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সাবেক সভাপতি পাবেল মাহমুদকে পুনরায় আহ্বায়ক ও কাউছার হোসেনকে ১ম যুগ্ম আহ্বায়ক করে ১০ সদস্যের উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে।

যুবলীগেরও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি: ২০১৬ সালের জুলাই মাসে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়। এতে সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মন্জুর হোসেন সুমনকে আহ্বায়ক ও অ্যাডভোকেট ইউসুফ আজমকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ২১ সদস্যের উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষ্যে তার দুই মাস আগে জেলা পরিষদের সদস্য মামুন বিন জাকারিয়াকে আহ্বায়ক ও কৌসিক আহমেদ সোহেলকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে পাল্টা আরেকটি আহ্বায়ক কমিটি দেন জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি সালাহ উদ্দিন টিপু। পরে জেলা কমিটিই বিলুপ্ত করে সব কার্যক্রম মৌখিকভাবে স্থগিত করে দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। সেই থেকে পৌর ও উপজেলার কোনো কমিটি নেই ও কার্যক্রমও নেই। কিন্তু সুমন গ্রুপের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইউসুফ আজমকে সম্প্রতি নবগঠিত উপজেলা আ.লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে।

তিন মাসের জন্য ২০১৮ সালের জুন মাসে পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটিও দেওয়া হয়। এতে স্থানীয় এমপির শ্যালক আজম চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও তানজিদ কামালকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি দেওয়া হয়। কিন্তু আজও আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি

স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটিও মেয়াদোত্তীর্ণ
২০১৬ সালের আগস্ট মাসে তিন মাসের জন্য তানভীর হায়দার চৌধুরী রিংকুকে আহ্বায়ক ও স্থানীয় এমপির শ্যালক সফিউল আজম চৌধুরী সুমনকে ১ম যুগ্ম আহ্বায়ক করে চার সদস্যের উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ কমিটি হয়। তারাও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি। গত ৩১ মে উপজেলা আ.লীগের সম্মেলনে রিংকুকে নবগঠিত উপজেলা আ.লীগের কমিটির ২য় ও সুমন চৌধুরীকে ৩য় সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। গত সাত বছর পর আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে ২০২২ সালে ২০ মে মো. মমিনকে আহ্বায়ক ও রাসেলকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৭ সদস্যের পৌরসভা আহ্বায়ক কমিটি হয়।

আওয়ামী লীগের এ সহযোগী সংগঠনের কোনো নিজস্ব কার্যালয় নেই ২০ বছর। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকরা তাদের নিজস্ব কার্যালয়ে দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছেন। নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের দাবি, দীর্ঘদিনেও সম্মেলন না হওয়ায় নতুন নেতৃত্বের বিকাশ ঘটছে না এ গুরুত্বপুর্ণ উপজেলায়। অবিলম্বে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার দাবি জানান।

জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন যুগান্তরকে বলেন, ৩১ মে রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২৬টি পদ ঘোষণা করা হয়। এক মাস আগে পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটিও করা হয়। জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হলেই রায়পুরসহ পাঁচ উপজেলার সব কমিটি গঠন করা হবে। কয়েক দিন পরই দলীয় কার্যালয়ও করে দেওয়া হবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here