ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিতে সম্মতি জানিয়েছেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তিনি এ সম্মতি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ড. ইউনূস বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আমি প্রথমে রাজি হতে চাইনি। আমি তাদের বলেছি, আমার বহু কাজ আছে, যেগুলো আমাকে শেষ করতে হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাকে বারবার অনুরোধ করে বলেন, আমরা এ রকম একটি রক্তক্ষয়ী আন্দোলন করে সফল হয়েছি। এই আন্দোলনে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, বহু শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশের সামনে সুযোগ এসেছে একটা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় দেশ পরিচালনার। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি দায়িত্ব নেন, তাহলেই সেটা সম্ভব। আপনি দায়িত্ব নিতে রাজি না হলে সেটা আমাদের কারও জন্যই ভালো হবে না। সে কারণেই আপনাকে আমরা অনুরোধ করছি দায়িত্ব নিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যখন এই কথা বলেন, তখন আমি নিজেও বিবেচনা করে দেখলাম, এই শিক্ষার্থীরা এত আন্দোলন করেছে, তাদের এ জন্য এত মূল্য দিতে হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যদি এত ত্যাগ স্বীকার করতে পারে, দেশের মানুষ যদি এত ত্যাগ স্বীকার করতে পারে, তাহলে আমারও কিছু দায়িত্ব আছে। তখন আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিতে রাজি আছি বলে শিক্ষার্থীদের জানিয়েছি।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে ভিডিও বার্তায় নাহিদ হাসান বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের রূপরেখা দিতে আমরা ২৪ ঘণ্টা সময় নিয়েছিলাম। কিন্তু জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় এখনই রূপরেখা ঘোষণা করছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। তার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, তিনি দায়িত্ব নিতে সম্মত হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ থাকবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হোক। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাকি সদস্যদের নামও আমরা সকালের মধ্যে ঘোষণা করব। আমরা সকালের মধ্যে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া দেখতে চাই।’