রংপুর মহানগরীর পরশুরাম থানা আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন রায় হারার বিরুদ্ধে মেডিকেল শিক্ষার্থীকে রুমে আটকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ওই কাউন্সিলরসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জনের নামে মামলা করেছেন।
এ ঘটনায় রংপুর মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশসহ অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। কাউন্সিলর হারাকে গ্রেফতারে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা। নইলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ার দেন তারা।
তবে আওয়ামী লীগ নেতা হারাধন রায় মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নগরীর কুকরুলের বাসিন্দা রংপুর মেডিকেল কলেজের ৪৬ ব্যাচের ছাত্র চন্দন কুমার বর্মণ তার বোনকে নিয়ে সোমবার দুপুরে ভোটার নিবন্ধনের কাজে রংপুর সিটি করপোরেশনে যান। সেখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে কাউন্সিলর হারাধন রায় হারার কাছে প্রত্যয়ন চান তারা।
এ সময় কাউন্সিলর হারা রমেক ছাত্র চন্দন ও তার বোনকে রোহিঙ্গা, অন্য জেলায় অপরাধ করে রংপুর নগরীর বাসিন্দা হওয়ার অপচেষ্টা করছে বলে তাচ্ছিল্য করেন। সেই সঙ্গে প্রত্যয়ন দিতে অস্বীকৃতি জানান।
কাউন্সিলের কথার প্রতিবাদ করলে ওই ছাত্রের সঙ্গে কাউন্সিলরের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এরপর চন্দন ও তার বোন সিটি করপোরেশন থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে কাউন্সিলর হারাধন ও তার লোকজন চন্দনের কলার টেনে চড়-থাপ্পড়সহ গালিগালাজ করেন। এ সময় ভাইকে বাঁচাতে গেলে চন্দনের বোনের শ্লীলতাহানির চেষ্টাসহ চন্দনকে একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে কাউন্সিলর ও তার লোকজন- এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
খবর পেয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি করপোরেশনে গিয়ে চন্দন ও তার বোনকে উদ্ধার করে কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসসহ মেডিকেল মোড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলসহ মহাসড়ক অবরোধ করে কাউন্সিলর হারাধনের শাস্তির দাবি জানান।
পরে পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে সড়ক অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীরা রংপুর মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. বিমল রায়কে স্মারকলিপি দেন। সেই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করা না হলে কলেজের শিক্ষকদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দেন শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী চন্দন রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় কাউন্সিলর হারাধন হারাসহ ১৫-২০ অজ্ঞাতদের নামে মামলা দায়ের করেছেন।
তবে মারপিটের বিষয়টি অস্বীকার করে রংপুর সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পরশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারাধন রায় হারা বলেন, তারা আমার কাছে নাগরিক সার্টিফিকেট নিতে আসছিল। মেয়েটির কথাবার্তা সন্দেহ হলে আমি তাকে প্রত্যয়নপত্র দেইনি। এ নিয়ে তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) হোসেন আলী। তিনি বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজের ছাত্র চন্দন রায় কাউন্সিলর হারাধনের নামসহ কয়েকজনকে অজ্ঞাত করে থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।