বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে আত্মসমর্পণ করার পর এলাকার নিয়ন্ত্রন ছেড়ে দেয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে গতকাল মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি চীন সীমান্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বলে জানা গেসে। সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে এএফপি।
মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের প্রায় তিন বছরের মাথায় জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছে জান্তা সেনারা।
বিদ্রোহীদের প্রচণ্ড আক্রমণের পর বহু এলাকা, সামরিক ঘাঁটি ও শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এর মধ্যে গত মাসে লোক্কাই নামে চীন সীমান্তে গুরুত্বপূর্ণ একটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিদ্রোহীরা।
বিদ্রোহীদের হামলার মুখে শান রাজ্যের লোক্কাই শহরের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে বাধ্য হয় সেনারা। থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের যোদ্ধাদের কাছে শত শত সেনা বিদ্রোহী জোট আত্মসমর্পণ করে।
গত বছরের অক্টোবর মাসে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত অভিযান শুরু করে বিদ্রোহীদের এই জোট। এরপর দেশের বিশাল এলাকা দখল করে নিয়েছে গোষ্ঠীটি।
তবে মনে করা হয় এটি গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় পরাজয়। এর আগে কখনো এতটা তোপের মুখে পরেনি জান্তা সরকার। যদিও আত্মসমর্পণের পর শহরের দায়িত্বে থাকা সেনা কমান্ডার ও সেনাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
বিপর্যয়কর এই ঘটনার পর এক মাসের মধ্যে সেনা কর্মকর্তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এএফপির প্রতিবেদন মতে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার তিন সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এর মধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারানো শহর লোক্কাইয়ের কমান্ডারও রয়েছেন। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনীর আরও একটি সূত্র।
তবে কবে, কখন কিংবা কোন আদালতে এই মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। এএফপি জানিয়েছে, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার তিন সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক আইনে অনুযায়ী শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি নিয়ে সামরিক ঘাঁটি ত্যাগ করতে হয়। এটির বরখেলাপকে অপরাধ বলে গন্য করা হয়। এর জন্য মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তবে সবশেষ মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য জান্তা মুখপাত্রের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে এএফপি।